“কুয়োতেই যার জন্ম-মৃত্যু, কুয়োতেই যার বাস, আলো নয়, অন্ধকারই তার বেঁচে থাকার একমাত্র আঁশ।” তবে কি একটি ধর্ম অপর একটি ধর্মের মতোই সত্য? না কি শুধু আপনারটিই শ্রেষ্ঠ? আপনার উত্তর হ্যাঁ/না সে যাইহোক, তবে বিশ্বে চার হাজারের বেশী ধর্ম রয়েছে। আমেরিকায় রন হুবার্ট নামক এক ব্যাক্তি ১৯৫৩ সালে "সাইন্টোলজি" নামক একটি ধর্ম উদ্ভব করে। সারা বিশ্বে এই ধর্মের ৩০ হাজার অনুসারী আছে। ভারতের রজনিস নামক এক ব্যাক্তি ১৯৭৪ সালে "ওশো" নামক একটি ধর্ম উদ্ভব করে। এই ধর্মেরও আবার দুই লক্ষ অনুসারী আছে।
কোকা-কোলা, জঙ্গলের উপজাতিদের জন্য একটি নতুন ধর্ম বানিয়ে দিয়েছে। ওই ধর্মে, পুজা করতে কোকা-কোলা ব্যাবহার করা হয়। এটা আসলে ছিলো একটি অভিনব প্রচার কৌশল। এটা দেখে, পেপসি কোম্পানীও অন্য উপজাতীদের জন্য ধর্ম বানিয়ে দিয়েছে। এসব ধর্ম বেশীদিন চালানোর উদ্দেশ্য ছিলো না। এসব ধর্ম কেউ চিনেও না। তবে মজার ব্যাপার, কোকা-কোলা ও পেপসি, উভয়েই ধর্ম বানিয়েছে।
আমার স্বল্প যোগ্যতায়, আমি নিজেও হয়তো একটি ধর্ম বানাতে পারবো। হয়তো মাত্র কয়েকজন অনুসারী হবে, তবে সেই ধর্মের, ঈশ্বর, ধর্মগ্রন্থ, পুজা, সবই থাকবে। ইচ্ছা হলে, আপনিও একটি ধর্ম বানাতে পারবেন। মাত্র ৫০-৬০ বছর আগে, রন হুবার্ট, রজনিস, এরা নতুন দুটি ধর্ম উদ্ভব করেছিল। আড়াই হাজার বছর আগে, গৌতম বুদ্ধ এমন এক ধর্ম উদ্ভব করেছিল। সেটাকে আমরা "বৌদ্ধ" ধর্ম বলে জানি। মানুষ যুগে যুগে এমন ইচ্ছামতন ধর্ম বানিয়ে গিয়েছে বলেই আজ হাজার করমের, হাজার ধরনের ধর্ম হয়ে গেছে।
“মিথ্যা শুনিনি ভাই এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনও মন্দির-কাবা নাই।”
আমরা কি কখনো হিন্দু বাঘ,মুসলমান সিংহ,খৃষ্টান হাতি বা ইহুদি জিরাফের কথা শুনেছি? না! পশু,পাখি,গাছপালা ওদের ও প্রাণ আছে সুতরাং জীব।অথচ মনুষ্য নামক জীবের ই একমাত্র ধর্ম আছে! ভাগ্যিস পশু সমাজে ধর্ম বলতে কিছু নেই! তা নাহলে বাংলাদেশের মানুষেরা ভারতের হিন্দু গরু খেত না, হয়তো আমরা বাংলাদেশের মুসলমানরা ইলিশদের অভক্ষ্য ঘোষণা করতাম!
কুয়োতে যে ব্যাং থাকে সে ভাবে কুয়ো আমাদের জন্যই বানানো হয়েছে, কি সুন্দর ঠান্ডা জল, শ্যাওলা ,ছোট ছোট পোকা আমাদের খাওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আসলে বহুদিন আগে কোন এক ব্যক্তির বা গোত্রের জলের বিশেষ দরকার পড়েছিল, তাই কুয়ো বানিয়েছিল, এখন পাইপলাইন হয়ে যাওয়ায় কুয়টা আর ব্যাবহার করে না। সেখানে কিছু ব্যাঙ আস্তানা নেয়, এর পর উত্তরসূরি বাঙেরা যাদের কুয়োতেই জন্ম এবং কুয়তেই মৃত্যু তাদের কাছে এই ভাবনাটা স্বাভাবিক যে কুয়োটা তাদের জন্যই তৈরি হয়েছে। সুতরাং কুয়োতেই যার জন্ম-মৃত্যু, কুয়োতেই যার বাস, আলো নয়, অন্ধকারই তার বেঁচে থাকার একমাত্র আঁশ!